হোল্ডিং ট্যাক্সের খুঁটিনাটি

যেভাবে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ করা হয় :

■ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য হোল্ডিং ট্যাক্সের পৃথক পৃথক রেট চার্টরয়েছে। নগরবাসীর সুবিধার্থে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ওয়েবসাইটে (www.dncc.gov.bd) রেট চার্টটিদেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন আপনার এলাকার বাড়ি বা ফ্ল্যাটের হোল্ডিং ট্যাক্সের রেটকত। 

■ আপনার বাড়ি বা ফ্ল্যাটের আয়তনের সাথে সংশিষ্ট এলাকার রেট দিয়ে গুণ করুন। গুন করার পর যে অংক দাঁড়াবে তা হলো ০১ মাসের মূল্যায়ন।

■ মাসিক মূল্যায়নকে ১০ মাস দিয়ে আবারো গুণ করুন। যদিও ১২ মাসে এক বছর, তথাপি ০২ মাসের মূল্যায়নের অংক বাদ দিয়ে বাৎসরিক মূল্যায়ন নিরূপণ করা হয়। সাধারণত বাড়ির সংস্কারের জন্য বাড়িরমালিক অর্থ ব্যয় করেন, বিধায় ০২ মাসের মূল্যায়ন বাদ দিয়ে ১০ মাসের মূল্যায়ন দিয়ে বাৎসরিক মূল্যায়ননিরূপণ করা হয়। 

■ অনেকেই বাৎসরিক মূল্যায়নকে হোল্ডিং ট্যাক্স মনে করে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। মনে রাখা দরকার, বাৎসরিকমূল্যায়নের ১২% হারে বাৎসরিক হোল্ডিং কর নির্ধারণ করা হয়। সরকারি আইনে সর্বোচ্চ ৩০% হারে হোল্ডিংকর নির্ধারণ করার বিধান থাকলেও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন শুধুমাত্র ১২% হারে হোল্ডিং কর আরোপ করেথাকে।

একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি আরো পরিস্কার হতে পারে।

ধরুন,

বাড়ির আয়তন ১,৫০০ বর্গফুট

সংশ্লিষ্ট এলাকার রেট (প্রতি বর্গফুট) ৬.৫০ টাকা

মাসিক মূল্যায়ন ১,৫০০ x ৬.৫০ = ৯,৭৫০ টাকা

বার্ষিক মূল্যায়ন ৯,৭৫০ × ১০ মাস = ৯৭,৫০০ টাকা

বার্ষিক হোল্ডিং কর ৯৭,৫০০ এর ১২% = ১১,৭০০ টাকা

হোল্ডিং কর রেয়াত/কর হ্রাসের সুবিধা পেতে চাইলে নিচের বিষয়গুলো মনে রাখুন:

■ রিভিউ করলে ১৫% হ্রাস নির্ধারিত “পি ফরম” পূরণ করে রিভিউ আবেদন দাখিল করলে  কর পর্যালোচনাপরিষদ (Assessment Review Board) আপনার বার্ষিক মূল্যায়ন সর্বোচ্চ ১৫% পর্যন্ত হ্রাস করে দিতে পারে।তবে মনে রাখবেন, হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণের পর আপনি যখন নোটিশ পাবেন, তার ৩০ দিনের মধ্যেআপনাকে রিভিউ আবেদন করতে হবে।

■ আপিল করলে ২৫% হ্রাস কর পর্যালোচনা পরিষদের সিদ্ধান্তে যদি আপনি সংক্ষুব্ধ হন, তাহলে আপনিবিভাগীয় কমিশনার, ঢাকা বরাবর আপিল করতে পারেন। আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল কর্তৃপক্ষ আপনারবার্ষিক মূল্যায়ন আরো ২৫% পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারেন।

■ নিজ বসবাসের সুবিধা হিসেবে ৪০% হ্রাস আপনি যদি আপনার বাড়ি বা ফ্ল্যাটে নিজে বসবাস করেন, তাহলেআপনার বার্ষিক মূল্যায়ন আরো ৪০% হ্রাস হয়ে যাবে।

■ ঋণ সুবিধা : আপনি জেনে খুশি হবেন, যদি আপনার গৃহ নির্মাণ ঋণ থাকে বা আপনি যদি ফ্ল্যাট লোননিয়ে থাকেন তাহলে আপনার গৃহীত ঋণের বাৎসরিক সুদ বার্ষিক মূল্যায়ন থেকে সম্পূর্ণ বাদ যাবে। এর ফলেআপনার বার্ষিক হোল্ডিং ট্যাক্স অনেকাংশে কমে যাবে। আপনার ঋণের মেয়াদ যত বছর বলবৎ থাকবে, ঠিকতত বছর আপনি এ কর হ্রাসের সুবিধা পাবেন। তবে মনে রাখবেন, রেজিস্টার্ড বন্ধকী দলিল ব্যতীত এ সুবিধাপাওয়া যাবে না। 

■ মুক্তিযোদ্ধা সুবিধা:  আপনি কি বীর মুক্তিযোদ্ধা? আপনি যদি বীর মুক্তিযোদ্ধা হয়ে থাকেন তাহলেনিম্নোক্তভাবে  পৌরকর সুবিধা পেতে পারেন: 

• শহীদ পরিবার, যুদ্ধাহত ও খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বসবাসকৃত বাড়ি বা ফ্ল্যাট সম্পূর্ণভাবে হোল্ডিংকরের আওতামুক্ত।

• সাধারণ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি বা ফ্ল্যাটের ১৫০০ বর্গফুট পর্যন্ত হোল্ডিং করের আওতামুক্ত। 

■ রিবেট সুবিধা : নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করলে সর্বোচ্চ ১০% রিবেট সুবিধা পাবেন।

নিয়মিত হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করুন, ঝামেলামুক্ত থাকুন। 

Leave a Comment

Your email address will not be published.